গাজী মোহাম্মদ আবু তাহের মহেশখালী
দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী মাতারবাড়ীতে নুরুল কবির (৫৫) নামের এক ব্যাক্তি’কে ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
৩০ ডিসেম্বর শুক্রবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন নুরুল কবিরকে হত্যা করেছে বলে তাঁর পরিবারের লোকজন দাবি করছেন।
নুরুল কবির মাতারবাড়ী ইউনিয়নের ০৭ নং ওয়ার্ড মগডেইল এলাকার জেবর মল্লুকের পুত্র । এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের হামলায় নুরুল কবিরের ছেলে নুরুল আবছার গুরুতর আহত হন।
নুরুল কবির ও মোঃসাইফুলের দাবি,জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মাতারবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়ার বাসিন্দা বশির আহমেদ তাঁর ভাইকে হত্যা করেছেন।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩১শে ডিসেম্বর শনিবার ভোররাতে মোঃরুবেল (৩০) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। আটক রুবেল একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বশির আহমেদের ভাতিজা।
মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সরওয়ার কামাল ও মহেশখালী থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়-
জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বশির আহমেদের সঙ্গে নুরুল কবিরের বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে ৩০শে ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মাতারবাড়ী আদর্শ পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে নুরুল কবিরের লোকজন বশির আহমেদের ছেলে আইয়ুব আলীর (২৪) ওপর হামলা চালায় এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আইয়ুব আলী গুরুতর আহত হন।
পরে আইয়ুব আলীর স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনার জেরে আবার বশির আহমেদের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ৩০ ডিসেম্বর শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নুরুল কবিরের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালান।
এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন নুরুল কবিরের বসত বাড়ীর দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে নুরুল কবিরকে হত্যা করেন।
এ সময় নুরুল কবিরের ছেলেও গুরুতর আহত হন। তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে মহেশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি প্রনব চৌধুরীর নির্দেশে স্থানীয় মাতারবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক হাসান মাহমুদ ঘটনাস্থলে যান। পরে রাত একটার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠান। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত বশির আহমেদ পলাতক। তাই এ বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মাতারবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক হাসান মাহমুদ বলেন-
নুরুল কবিরের মাথায়,গলায় ও দুই হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
তবে এই ঘটনার আগে সন্ধ্যায় নুরুল কবিরের লোকজন আবার বশির আহমেদের ছেলের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহতের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে ৩১ ডিসেম্বর মাগরিবের নামাজের পর জানাযায় সম্পন্ন করে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রণব চৌধুরী বলেন-
নিহতের পরিবারে পক্ষ থেকে থানায় এখনো কোন মামলা দায়ের করেনি তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। অন্য অপরাধীদের ধরতে পুলিশি অভিযান চলমান রয়েছে।