1. shahalom.socio@gmail.com : admin :
  2. zahangiralam353@gmail.com : Channel Inani :
রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:০২ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
ঈদগাঁওতে ইসলামী সম্মেলনে বক্তারা বিশুদ্ধ আকিদা-বিশ্বাসের একমাত্র মাপকাঠি কুরআন-সুন্নাহ শহরে পাহাড়কাটা মামলায় ২ জনকে দেড় বছরের কারাদণ্ড,১লক্ষ টাকা জরিমান চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে এক সন্তানের মায়ের আত্মহত্যা বিজয় ও বুদ্ধিজীবী দিবস ঈদগাঁও উপজেলা প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি 553480201701351027 কক্সবাজার জেলা বাপার জরুরি সভায় আলমগীর কবির পরিবেশগত সংকট নিরসনে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি উপজেলা অনুমোদনে ঈদগাঁও উপজেলা বাস্তবায়ন পরিষদের ভূমিকা অপরিসীম পুলিশ হত্যা মামলায় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার চট্টগ্রামে চট্টগ্রামে হেলে পড়া ভবন পরিদর্শনে গেল তদন্ত কমিটি Мостбет скачать на компьютер: бесплатное приложение windows

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অপকর্মের হুতা নবী হোসেন গ্রুপের কমান্ডার মোবাশ্বর ধরাছোঁয়ার বাইরে

  • আপডেট করা হয়েছে মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১১১ বার পড়া হয়েছে

 

আজিজুল হক রানা::

কক্সবাজার জেলার উখিয়ার ১৫নং জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক গড়ে উঠেছে মাদক ও স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেট!

চালাওভাবে রোহিঙ্গা অনুপ্রেবেশের অনেক আগে থেকে বাংলাদেশে সক্রিয় ছিল নবী হোসেন সিন্ডিকেট। উখিয়া-টেকনাফের হোয়াইক্যং, উলুবনিয়া, পালংখালীর আঞ্জুমান পাড়া ও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম তুমব্রু ও রেজু আমতলী সীমান্ত ব্যবহার করে মরণনেশা ইয়াবা, মদ, বিয়ার ও স্বর্ণ পাচার করে আসছে নবী হোসেন গ্রুপ। ইতিমধ্যে নবী হোসেন গ্রুপের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সন্ত্রাসী গ্রুপের কাছে অস্ত্র বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময় পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, কোস্টগার্ড সহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হাতে আটক একাধিক মাদক ও স্বর্ণ পাচারকারীদের আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে নবী হোসেন, মোবাশ্বর, ফয়সাল সহ শতাধিক গডফাদারের নাম। সীমান্তে মাদক সহ নানা অপরাধ দমনে নবী হোসেনকে জীবিত অথবা মৃত ধরে দিতে পারলে ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)। এর পর থেকে নবী হোসেন মিয়ানমারের সীমান্তে আত্নগোপনে থেকে মাদক কারবার চালিয়ে গেলেও রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক মাদক চোরাচালান ও অপরাধ সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে নবী হোসেন গ্রুপের সেকেন্ড-ইন কমান্ড মোবাশ্বর।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা অনুপ্রেবেশের সময় স্ব-পরিবারে মোবাশ্বর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের উখিয়ার পালংখালী জামতলী ১৫ নং ক্যাম্পের সি-ব্লকে আশ্রয় নেয়। মিয়ানমারের কোয়াচিবং এলাকার রহিম বক্স ও সাজেদা বেগমের বড় ছেলে মোবাশ্বর। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় গ্রহণের বছর না পেরোতে নবী হোসেন গ্রুপের হাত ধরে জড়িয়ে পড়ে অপরাধ জগতে! সে থেকে মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা ও স্বর্ণ নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিত মোবাশ্বর ও তার অপরাপর সহযোগীরা।

সর্বশেষ ২০১৮ সালে মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে আনা ১০টি স্বর্ণের বার সহ মোবাশ্বর চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানাস্থ ডিবি পুলিশের হাতে আটক হন। আটক পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জি,আর নং-৭০৬/১৮, ধারা বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ এর ২৫-বি, মামলা নং ৩৯৩/২০১৮ আইনে মামলা দায়ের করে মোবাশ্বরকে জেল হাজতে প্রেরণ করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। উক্ত মামলায় ৭মাস কারাভোগের পর ২০১৯ সালে জামিনে মুক্ত হয়ে আবারো চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়ে মোবাশ্বর। মোবাশ্বর ইতিমধ্যে সুকৌশলে বাংলাদেশি জন্মনিবন্ধন, ভোটার আইডি কার্ড ও পাসপোর্টের মালিক বনে গেছে, যেখানে বাংলাদেশে জন্ম গ্রহণকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের পাসপোর্ট করতে গেলে হিমশিম খেতে হয়৷ সেখানে রোহিঙ্গা মোবাশ্বর কোন অদৃশ্য ছায়ায় বাংলাদেশের পাসপোর্ট পেল সেটা এখনো অজানা!

মোবাশ্বরের ছোট ভাই মৌলবি ফায়সালের বসবাস পালংখালীর শফিউল্লাহ কাটা ১৬ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের A-6 ব্লকে। মৌলবী ফয়সাল মাদ্রাসা প্রতিষ্টা করে উক্ত ব্লকে লোকচক্ষুর অন্তরালে গড়ে তুলেছেন বিশাল মাদক সিন্ডিকেট। মোবাশ্বরের মাদক ও স্বর্ণের চোরাচালান বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিতে কাজ করে তারই আপন ভাই মৌলবী ফয়সাল। মৌলবী ফয়সাল বাংলাদেশী পাসপোর্ট ব্যবহার করে সৌদি আরব গিয়ে মসজিদ, মাদ্রাসার নাম দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা উত্তোলন করে নিজে আত্মসাৎ করে। মৌলবী ফয়সালের ও রয়েছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট।

মোবাশ্বর জেলে থাকাকালীন মাদক ও স্বর্ণ ব্যবসার যাবতীয় চোরাই কারবার পরিচালনা করত তারই আপন ভাই ক্যাম্প-১৫’তে বসবাসরত কায়সার। কায়সার ইয়াবাসহ আটক হয়ে দীর্ঘদিন জেল-হাজতে ছিল, ইয়াবা সহ পুলিশের কাছে ধরা পড়ে মিথ্যা তথ্যে হেলাল নাম লিপিবদ্ধ করেন এজাহারে, যাতে সহজে জামিনে আসা যায় এবং এতে ঠিকানা উল্লেখ করেন বালুখালী। গত বছর জামিনে এসে আবারো রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রীক অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে কায়সার উরফে হেলাল।

মোবাশ্বরের বড় বোন ক্যাম্প-১৬ তে বসবাসরত জান্নাত আরা প্রকাশ জন্নতি ও তার প্রবাসী বড় ভাই ফেরদৌসের স্ত্রী মিয়ানমার কোয়াচিবং এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে বুলবুল প্রকাশ বুলবুলিকে দিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় লুকিয়ে ইয়াবা পাচার করে থাকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় এবং তাদের ইয়াবা ও স্বর্ণ পাচারের প্রধান টার্গেট বয়স্ক মহিলা, যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহজে ফাঁকি দেওয়া যায়। তাদেরকে দিয়ে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের ভিআইপি হোটেল গুলোতে অল্প বয়সী রোহিঙ্গা তরুণী (যৌন কর্মী) পাচার করে বলে জানিয়েছেন ১৫ ও ১৬ নং ক্যাম্পের একাধিক রোহিঙ্গা নেতা।

গত ৫বছর ধরে ইয়াবা গডফাদার মোবাশ্বর নানা অপকর্ম করে গেলেও তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না, কেউ প্রতিবাদ করলে রাতের আধারে নবী হোসেন গ্রুপের সদস্যরা তুলে নিয়ে গিয়ে অকথ্য নির্যাতন সহ হাত-পা কেটে পেলে অনেক সময় বাথরুমের পরিত্যক্ত ট্যাংকে ফেলে মারা হয় বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

মোবাশ্বরের মাদক কারবার ও ক্যাম্পে খুন, গুমে জড়িত থাকার বিষয়ে ১৫ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হাবিবের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, রাতে ক্যাম্পে বহিরাগতদের আনাগোনা চোখে পড়ে, তবে এরা কারা চিহ্নিত করা যাচ্ছেনা, মাঝেমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে গুটিকয়েক অস্ত্রধারী মাদক কারবারি আটক হলেও ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে প্রকৃত অপরাধীরা।

১৬ নং ক্যাম্পের চেয়ারম্যান সুরত আলম প্রতিবেদককে বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধে জড়িতদের তালিকা করে আমর্ড পুলিশকে দেওয়া হয়েছে ওনারা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবেন বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, খালি গায়ে, খালি হাতে মিয়ানমার থেকে ২০১৭ সালে ৭ লক্ষের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করলেও ৫বছরের ব্যবধানে মাদক, স্বর্ণ চোরাচালান ও মানব পাচার করে বেশীরভাগ রোহিঙ্গা কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে তারা ক্যাম্পের বাইরে এসে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ অবৈধভাবে বাংলাদেশী পাসপোর্ট করে রোহিঙ্গারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছে যা অদূর ভবিষ্যতে এদেশের জন্য অশনিসংকেত বয়ে আনবে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শীর্ষ অপরাধী মোবাশ্বর ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার পূর্বক আইনের আওতায় আনলে নবী হোসেন সিন্ডিকেটের অনেক স্পর্শকাতর গোপন তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন সাধারণ রোহিঙ্গা ও পালংখালী ইউনিয়নের সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Designed by: Nagorik It.Com